সিঙ্গেল না ডাবল!
রানের দেখাই পাচ্ছেন না বিশ্বের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ক্রিস গেইল। সেঞ্চুরি তো দুরের কথা। ২০১৩ সালের জুনের পর থেকে প্রায় ২০টি ইনিংস খেলে ফেলেছেন ক্যারিবীয় দৈত্য। কিন্তু রানের দেখাই পাচ্ছেন না তিনি। ক্যারিবীয় ক্রিকেট ভক্তরা তো সামাজিক যোগাযোগ সাইটে ঝড় তুলেছিল তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ব্যাপারে। যদিও টিম ম্যানেজমেন্ট তার ওপরই আস্থা রেখেছে। শেষ পর্যন্ত সমালোচকদের সমুচিত জবাবটা দিতে পারলেন ক্রিস গেইল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারলেন। ৫১ বলে ৫০, ১০৫ বলে সেঞ্চুরি, ১২৬ বলেই ১৫০ আর ১৩৮ বলে ডাবল! আগের ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১৫৩ রানের ইনিংস টপকে একেবারে ডাবল সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি আর সবচেয়ে বড় জুটি, দু’টিই এল গেইলের ব্যাট ধরেই। ডাবল সেঞ্চুরির তালিকায় শীর্ষে দুই ভারতীয় রোহিত (২৬৪) আর দ্বিতীয় সেওয়াগ (২১৯)। তারপর গেইল। শেষ বলে আউট না হয়ে ছক্কা মারলেই সেওয়াগকে পেছনে ফেলতেন গেইল।
ক্যানবেরার মানুকা ওভালে যখন টস জিতে অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই যখন পানিয়াঙ্গারার বলে বোল্ড হয়ে গেলেন ডোয়াইন স্মিথ, তখন অনেকেই শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন, তবে কি আজ ক্যারিবীয়দের জন্য খারাপই অপেক্ষা করছে। কিন্তু, মারলন স্যামুয়েলসকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত যখন দাঁড়িয়ে গেলেন ক্রিস গেইল, তখন সব চিন্তা দুর। দলকে সঠিক ট্র্যাকে ফেরানোর পাশাপাশি দীর্ঘদিন পর গেইল নিজেও ফিরলেন রানে। তবে স্বভাবসিদ্ধতাকে কোনভাবেই হারিয়ে নয়। ব্যক্তিগত ৯৯ করার পর ৩৫.১ ওভারে মাসাকাদজার বলে এক রান করে ক্যারিয়ারের ২২তম সেঞ্চুরি করেন গেইল।
মাত্র দুই বল খেলে ডোয়াইন স্মিথ যখন পানিয়াঙ্গার বলে বোল্ড আউট হন অন্য প্রান্তে তখন গেইল। কিছুটা ধীরগতি হলে কি হবে আস্তে আস্তে চিরচেনা রূপে ফিরতে শুরু করেন গেইল। অপর প্রান্তে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মারলন স্যামুয়েলস। গেইলের সেঞ্চুরির আগেই হাফসেঞ্চুরি করেন স্যামুয়েলস।
সর্বশেষ গত আগস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৮ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন গেইল। এরপর পুরোপুরি ভুগছিলেন রান খরায়। বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর দুটি প্রস্তুতি ম্যাচসহ গেইলের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৪১ রান। আর সর্বশেষ সেঞ্চুরি (১০৯ রানের ইনিংস) করেছিলেন ২০১৩ সালের জুনে শ্রীলংকার বিপক্ষে।
৫১ বলে ৫০, ১০৫ বলে সেঞ্চুরির পর আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠেন গেইল। সেই চিরচেনা রূপ। চলতে থাকে মারমারকাটকাট করে বোলারদের তুলোধুনো। একের পর এক চারছক্কা। স্যামুয়েলস তখনো সেঞ্চুরি থেকে দূরে। কিন্তু গেইল ১২৬ বলেই ১৫০। মাত্র ১০টি ছক্কাসহ ছয়টি চার। তখনো ৪২ বল বাকি। দলীয় সংগ্রহ এক উইকেটে ২৫৮। তখনো ৪২ বল বাকি। দলীয় সংগ্রহ এক উইকেটে ২৫৮। গেইলকে তখন ডাবল সেঞ্চুরির নেশা পেয়ে বসে। স্যামুয়েলসের সেঞ্চুরির আগেই গেইল পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। সেইসাথে ইতিহাস গড়লেন। বিশ্বকাপেই দেখা মিলল ডাবল সেঞ্চুরির। ক্রিকেট ইতিহাসে আগে ডাবল সেঞ্চুরি হলেও বিশ্বকাপে এটাই প্রথম।
অন্যপ্রান্তে ১৪৩ বলে স্যামুয়েলস অষ্টম সেঞ্চুরির দেখা পান। তবে মাদাকাদজার বলে ২১৫ রানে থামে গেইল। শেষ বলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন চিগাম্বুরার হাতে। আর ৫০ ওভার শেষে ক্যারিবিয়দের সংগ্রহ দুই উইকেটে ৩৭২। স্যামুয়েলস অপরাজিত থাকেন ১৩৩ রানে।
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন