সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড বাংলাদেশের
পাকিস্তানের বিপক্ষে গত বছরই ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৩২৬ রানের ইনিংস গড়েছিলো বাংলাদেশ। গত এশিয়া কাপে মিরপুরেই এই রেকর্ড গড়ে টাইগাররা এবং সেবারই সর্বশেষ পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও ওই ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত হতাশায় পুড়তে হয়েছিল মুশফিকদের। হারতে হয়েছিল ৩ উইকেটের ব্যবধানে। সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আবারও মুখোমুখি টিম বাংলাদেশ এবং আবারও নিজেদের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। তামিম আর মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩২৬ রানকে টপকে এবার বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ালো ৩২৯ রান। ওয়ানডেতে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটাই সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
শুধু তাই নয়. পাকিস্তানিদের পেয়ে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়ে ফেলেছে। অবশ্যই এই জুটির কৃতিত্ব তামিম আর মুশফিকের। দু’জন মিলে তৃতীয় উইকেটে গড়েছেন ১৭৮ রানের জুটি। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে যে কোন উইকেটে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি।
বাংলাদেশের হয়ে এর আগে সর্বোচ্চ ১৭৫ রানের জুটি ছিল চতুর্থ উইকেটে। ২০০৬ সালে নারায়গঞ্জের ফতুল্লায় কেনিয়ার বিপক্ষে রাজিন সালেহ আর হাবিবুল বাশার সুমন গড়েছিলেন ওই জুটিটি। প্রায় ৯ বছর পর ১৭৮ রান করে সুমন-সালেহ’র ওই জুটি ভাঙলেন তামিম-মুশফিক।
এ নিয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অষ্টমবারের মতো ৩০০ বা ততোধিক রান করার রেকর্ড গড়লো। এর মধ্যে শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই ম্যাচটিতে ৩২৬ রান করেও হেরেছিল বাংলাদেশ, অন্য ছয়টিতেই জয়ের হাসি হেসেছে টাইগাররা।
প্রায় ৯ বছর আগে, ২০০৬ সালের মার্চে কেনিয়ার বিপক্ষে প্রথম ৩০০ রানের মুখ দেখে বাংলাদেশ। সেবার শাহরিয়ার নাফিসের ৯১, আফতাব আহমেদের ৬২ এবং মাশরাফির ১৬ বলে ৪৪ রানের ক্যামিও’র ওপর ভরে করে ৩০১ রান করেছিল বাংলাদেশ। হাবিবুল বাশারের দল ম্যাচটি জিতে নেয় ১৩১ রানে।
প্রায় ২ বছর পর ২০০৮ সালের জুনে আরব আমিরাতের বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুলের ১০৯ ও রকিবুল হাসানের ৮৩ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে ঠিক ৩০০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। খেলায় আশরাফুলের দল ৯৬ রানের জয় পায়।
এরপর ২০০৯ সালে এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দু’দুবার ৩০০ প্লাস রানের মুখ দেখে টিম বাংলাদেশ। ১১ আগস্ট বুলাওয়েতে সিরিজে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সাকিব আল হাসানের ১০৯ ও তামিম ইকবালের ৭৯ রানের ইনিংসের কল্যাণে ৩২০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। সাকিবের দল ম্যাচটিতে ৪৯ রানের জয় পায়।
এর পাঁচদিন পর সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে তামিম ইকবালের অনবদ্য ১৫৪ রানের সুবাদে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। চার্লস কভেন্ট্রির ১৯৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসের ওপর ভর করে ৩১২ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। তামিমের কল্যাণে ১৩ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে সাকিবের দল।
এরপর ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর শামসুর রহমান শুভর (৯৬), নাইম ইসলাম (৬৩) ও নাসির হোসেনের (৪৪) ব্যাটের ওপর ভর করে নিউজিল্যান্ডের করা ৩০৭ রান ৪ বল হাতে রেখেই টপকে যায় বাংলাদেশ।
গত বছর এশিয়া কাপের ম্যাচে এনামুল হকের সেঞ্চুরি (১০০) ও ইমরুল কায়েস (৫৯), মুশফিকুর রহিম (৫১), মুমিনুল হক (৫১) এর ফিফটির সঙ্গে সাকিব আল হাসানের ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩২৬ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ।
তবে আহমেদ শেহজাদের সেঞ্চুরি (১০৩) ও শহিদ আফ্রিদির ২৫ বলে ৫৯ রানের ঝড়ো ইনিংসের কারণে ঘরের মাঠে চোখের জলে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। মাত্র ১ বল হাতে থাকতেই ম্যাচটি জিতে নেয় পাকিস্তান।
শুক্রবার পাকিস্তান ম্যাচের আগে বাংলাদেশ সর্বশেষ ৩০০ প্লাস রানের দেখা পায় সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে। তামিম ইকবাল (৯৫), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৬২), সাকিব (৫২), মুশফিকের (৬০) ফিফটি ও সাব্বির রহমানের ৪২ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে স্কটল্যান্ডের করা ৩১৮ রান ৯ বল থাকতেই টপকে যায় মাশরাফির দল।
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন