ফিগোকে ক্ষমা করেনি বার্সা
লুইস ফিগোর প্রতি দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্ষোভ, রাগ ও ঘৃনা এখনও অব্যাহত রয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার। ২০০০ সালে বার্সা সমর্থকদের হতাশ করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখান এই পর্তুগিজ তারকা, যেটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি কাতালান সমর্থকরা। যার কারণে ১৫ বছর পরও এই কিংবদন্তী তারকাকে ক্ষমা করেনি এই স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
বার্সেলোনা ও ফিগোর সম্পর্ক নতুন করে তিক্ততায় রূপ নিল। ২০০৫ সাল থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের আগের দিন দুই ফাইনালিস্ট ক্লাবের সাবেক কিংবদন্তীদের নিয়ে বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে এক প্রীতি ম্যাচের প্রচলন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী এবারও বার্সেলোনা ও জুভেন্টাসের সাবেক কিংবদন্তী তারকাদের নিয়ে বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে এক প্রীতি ম্যাচ হওয়ার কথা। আগামী শুক্রবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
এই প্রীতি ম্যাচে বার্সেলোনার সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে উয়েফার পক্ষ থেকে ডাক পেয়েছেন পর্তুগিজ কিংবদন্তী তারকা লুইস ফিগো। তবে বেঁকে বসে বার্সার সমর্থকরা। তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। ফলে বার্সা উয়েফার কাছে ফিগোর নাম প্রত্যাহারের আদেবন জানায় এবং এতে তারা সফলও হয়। ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কাতালান ক্লাবের আবেদন গ্রহণ করে লুইস ফিগোকে প্রীতি ম্যাচ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।
২০০০ সালে লুইস ফিগোর সঙ্গে বার্সার তিক্ততার শুরু। ১৯৯৫ সাল থেকে পাঁচ বছর বার্সেলোনায় ছিলেন লুইস ফিগো। এই পাঁচ বছর দুবার লা লিগা শিরোপা জেতান কাতালান ক্লাবকে। কিন্তু ২০০০ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে তখনকার রেকর্ড ৩৭ মিলিয়র ইউরো ট্রান্সফার ফি’তে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে চলে যান তিনি, যেটা মেনে নিতে পারেনি বার্সা সমর্থকরা।
২০০০ সালের অক্টোবরে লুইস ফিগো ন্যু-ক্যাম্পে আসলে বার্সা সমর্থকরা বেশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে তার প্রতি এবং ক্ষমাহীনভাবে তাকে দেখে। গ্যালারিতে থাকা হাজার হাজার দর্শক তখন এই পর্তুগিজ তারকার বিরুদ্ধে নানা বিদ্রুপাত্মক স্লোগান দিতে থাকে। এই সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ও দর্শকদের রাগ প্রশমিত করতে নিজের কান ধরে অপরাধীর মতো ভান করেন। তবে দর্শকদের রাগ ও ক্ষোভ না কমে বরং বেড়েছে।
পরের বছর ন্যু-ক্যাম্পে আসলে দর্শকরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ফিগোকে লক্ষ্য করে বিয়ারের ক্যান ও বোতল নিক্ষেপ করে এবং লাইটার মেরে খেলায় বিঘ্ন ঘটায়। এই ঘটনায় তখন ২০ মিনিট খেলা বন্ধ রাখতে বাধ্য হন ম্যাচ রেফারি।
বার্সা ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগে দিয়ে পরের বছরই রিয়াল মাদ্রিদকে লিগ শিরোপা জেতান লুইস ফিগো এবং ২০০১ সালেই ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। এক বছর পর রিয়ালকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতান। ২০০৩ সালে আবার বার্নাব্যুর ক্লাবটিকে লিগ শিরোপা জেতান। ২০০৫ সালে ফ্রি ট্রান্সফারে রিয়াল ছেড়ে ইন্টার মিলানে নাম লিখান এই কিংবদন্তী তারকা।
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন