প্রথমবারের মতো জাতীয় সার্ফিং
উত্তাল ঢেউ, তার মধ্যে দিয়েই আকাঁবাকা হয়ে ছুঁটে চলা। পায়ের নিচে সার্ফিং বোর্ড, যাতে বেশ দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, রাখতে হয় শরীরের ভারসাম্যও। কেউ লক্ষ্যে পৌছাতে পারে, কেউবা ঢেউয়ের মধ্যেই আছড়ে পড়ে। বলা যায় দুরুন্ত, সাহসী ও রোমাঞ্চকর এক প্রতিযোগিতার নাম সার্ফিং। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গেই প্রতিনিয়ত লড়াই করার অভ্যাসই যেন সার্ফারদের। বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে সার্ফিংয়ের মতো ইভেন্ট এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি।
তবে আশার কথা, চলতি মাসেই কক্সবাজারের লাবনী বিচে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রথমবারের মতো জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা। এই টুর্নামেন্টের আয়োজক বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশন। যাদের পথচলাও সবে শুরু হয়েছে।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক ভবনে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলন করে এই অ্যাসোসিশেয়শন। যেখানে উপস্থিতি ছিলেন বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মার্কেটিং অ্যান্ড মিডিয়া ব্যাবস্থাপক পারভেজ আহমদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ এই মুহুর্তে প্রায় ৭০জন সার্ফার রয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী সার্ফার ২০ জন। সব মিলিয়ে প্রায় শতাধিক সার্ফারকে প্রশিক্ষন দেয়ার ব্যবস্থা করেছে সার্ফার অ্যাসোসিয়েশন। সপ্তাহখানেক ধরে এই প্রশিক্ষণ দেবে ‘সার্ফিং দ্যা নেশন্স’ নামের প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে এই প্রতিষ্ঠানের ২২ সদস্যের একটি দল ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অবস্থান করছে। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে টিম লিডার জ্যাকসি ট্রেইনসহ (যুক্তরাষ্ট্র), অ্যান্ড্রু ক্যাপি (অস্ট্রেলিয়া) ও কেট অ্যাম (দক্ষিণ আফ্রিকা) কথা বলেছেন। জানিয়েছেন তাদের লক্ষ্যের কথা। বাংলাদেশে সার্ফিংয়ের মান উন্নয়ন ও উন্নত প্রশিক্ষনের জন্যই কয়েকদিন তারা কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগেও এই টিম বাংলাদেশে এসেছে একাধিকবার। তখন কক্সবাজারে নিরাপদ জোন হিসাবে সার্ফিং প্র্যাকটিস করে গেছেন তারা। এবারও লক্ষ্য তাই। তবে এবার প্রাকটিসের পাশাপাশি বাংলাদেশী সার্ফারদের প্রশিক্ষণ দেবে তারা।
আগামী ১৫ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। তবে প্রথমবারের মতো জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা শুরু হবে ২৬ এপ্রিল। দুই দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতা শেষ হবে ২৭ এপ্রিল। আগামী ২ মে বাংলাদেশ ছাড়বে সার্ফিং দ্যা নেশন্সের সদস্যরা।
প্রথমবারের মতো জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল বিন আনোয়ার বলেন, ‘আমরা নতুন ফেডারেশন। আমাদের পথ চলা শুরু হয়েছে মাত্র কয়েক মাস আগে। আগামী ২৬ এপ্রিল (সম্ভাব্য তারিখ) থেকে প্রথম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা শুরু করতে যাচ্ছি আমরা। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’
সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সার্ফিংকে প্রমোট করতে চাই। এর মাধ্যমে পর্যটন খাতও সমৃদ্ধি হবে আশা করি। প্রথমবারের মতো আমাদের পথচলা। আশা করি সবাই সাথে থাকবেন। যাতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সার্ফিংকে জনপ্রিয় করে তুলতে পারি। শুধু কক্সবাজার নয়, পতেঙ্গা, কুয়াকাটার মতো জায়গাতেও সার্ফিং ছড়িয়ে দিতে চাই’।
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন