না ফেরার দেশে টাইসন

না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক তারকা পেসার ফ্রাঙ্ক টাইসন; গতির বলে বিভীষিকা ছড়িয়ে যিনি খ্যাতি পেয়েছিলেন ‘টাইফুন’ টাইসন নামে। রবিবার রাতে টাইসনের মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছে তার কাউন্টি ক্রিকেট দল নর্দাম্পটনশায়ার। খেলোয়াড়ি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত টাইসনের বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন টাইসন। শেষ অব্দি অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
নর্দাম্পটনের হয়ে ১৭০টি ম্যাচ খেলা ‘টাইফুন টাইসন’-এর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি ইনজুরির কারণে। প্রথাগত ফাস্ট বোলারদের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন স্টাইলে বোলিং করতেন টাইসন। যে কারণে একদিকে তার বল যেমন ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্ক ছড়াত; তেমনি টাইসনের শরীরকেও এর ভার সইতে হতো অনেক বেশি। এই কারণেই ইনজুরিতে পড়ে মাত্র ৩০ বছর বয়সেই খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানতে বাধ্য হোন এই সাবেক ইংলিশ তারকা পেসার।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে টাইসনের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময়টি ছিল ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজ। এই সিরিজে টাইসনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ ব্যবধানে হারাতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। ধীর লয়ে শুরু করা টাইসন শেষ অব্দি ২৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ শেষ করেন। এর মধ্যে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ১০ উইকেট এবং মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে মাত্র ২৭ রানে ৭ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। এটি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ইনিংস।
ইংল্যান্ডের হয়ে মোট ১৭ টেস্টে ১৮.৫৬ গড়ে মোট ৭৬ উইকেট পেয়েছিলেন টাইসন। অন্যদিকে, নর্দাম্পটনের হয়ে মোট ১৭০ ম্যাচে ২০.৯৪ গড়ে শিকার করেছিলেন ৫২৫ উইকেট। সব মিলিয়ে ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে মোট ২৪৪টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন ‘টাইফুন’ টাইসন; নিয়েছেন ৭৬৭ উইকেট।
খেলোয়াড়ি পেশা থেকে অবসর নেওয়ার পর জীবনের বাকিটা সময় অস্ট্রেলিয়াতেই কাটিয়েছেন টাইসন। এ সময়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চাকুরিও করেছেন। এ ছাড়া কোচ, ধারাভাষ্যকার ও ক্রিকেট সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করেছেন। ভিক্টোরিয়া ও কুইন্সল্যান্ডের অগণিত ক্রিকেটারকে কোচিং করিয়েছেন তিনি। টাইসনের মৃত্যুতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দুই দেশের ক্রিকেটাঙ্গনেই তাই শোকের ছায়া নেমেছে।
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন