জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার ১০৫তম আসর শুরু

বছরজুড়ে অপেক্ষার পালা শেষে আবার শুরু হচ্ছে শতবছরের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা। আজ থেকে লালদিঘী মাঠ ঘিরে বৈশাখী আমেজে শুরু হয়েছে জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার ১০৫তম আসর। তিনদিনব্যাপী মেলা বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলেও বলীদের লড়াই হবে ২৫ এপ্রিল শুক্রবার। প্রতিবছর বলী খেলা আর বৈশাখী মেলা ঘিরে লালদিঘী এবং আশপাশের এলাকা প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়। অনেক আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে এখানে আসতে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। নানান ধরণের পণ্য দিয়ে পসরা সাজিয়ে বসে গ্রামবাংলার সওদাগররা।
এদিকে, মেলা শুরুর আগে থেকেই বেশ জমে উঠেছে জানিয়ে মরহুম আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তী প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির পরিচালনা সম্পাদক স্বপন কুমার মহাজন বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব যাতে প্রতিবছরের মতো বর্ণাঢ্য আয়োজনে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এজন্য সর্বস্তরের সহযোগিতা প্রয়োজন।’ এই আয়োজন আরো উৎসবমুখর করে তোলার জন্য প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট মহলকেও সর্বাত্তক সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।
লালদিঘী পাড়ের চারপাশ ব্যবসায়ীরা শীতল পাটি, হাতপাখা, ফুলের ঝাড়ু, পোড়া মাটির বাঘ-হাতি, কাঠের পুতুল, রেশমি চুরি নিয়ে রাঙিয়ে তুলেছে অপরূপ সাজে। লালদিঘীর চারপাশে রাস্তাঘাটে যতদূর দুচোখ যায় শুধু বৈশাখী মেলার আবহ। ১০৪ বছর ধরে লালদিঘী পাড়ে বৈশাখের ১১, ১২, ১৩ এই তিনদিন গোটা বাংলার মানুষ মাতোয়ারা থাকে গ্রামবাংলার অতীত ঐতিহ্যে ভরপুর বৈশাখী মেলায়। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বাংলার ১৩১৬ সালের ১২ বৈশাখ (ইংরেজি ১৯০৯ সালের ২৫ এপ্রিল) বলীখেলা বা মল্লযুদ্ধ দিয়ে সূচিত হয় এই বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার। চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার সওদাগর (ব্যবসায়ী) আবদুল জব্বার এটি শুরু করেছিলেন বলে তার মৃত্যুর পর তার নামেই এই উৎসবের নামকরণ ‘জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা’। সেই থেকে প্রতিবছর বৈশাখের ১২ তারিখ অনুষ্ঠিত হয় বলী খেলা।
চট্টগ্রামসহ টেকনাফ, রামু, কক্সবাজার, চকরিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া এবং পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে বলীরা লালদিঘী পাড়ে ছুটে আসছে বলী খেলায় অংশ নিতে। লড়াইয়ের জন্য বলীরাও মাসখানেক আগে থেকেই নিয়ে রেখেছে প্রস্তুতি, এখন অপেক্ষা শুধু লড়াইয়ের।
উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, ‘চারদিকে এখন উৎসব আর কোলাহল। লালদিঘী পাড়ে আবার মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে গ্রামবাংলার প্রাণের মেলায়। সবসময় এমন উৎসবমুখর ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই আমরা সবাই মিলে।’
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন