গুডবাই জহির খান

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ কিছুদিন ধরেই অনুপস্থিত ভারতের সেরা পেসার জহির খান। অনেক তারকা ক্রিকেটারকে মাঠ থেকে বিদায় দিতে দলে সুযোগ দেওয়া হয়। তবে তেমন সুযোগ হল না জহির খানের। তাই মাঠের বাইরে থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই বলে দিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা পেসার হিসেবে ভাবা হয় তাকে। অনেকেই কপিল দেবের চেয়ে সেরা বোলার মনে করে থাকেন জহির খানকে। কপিল দেব হয়তো এগিয়ে ছিলেন অলরাউন্ড নৈপুন্য এবং অধিনায়কত্বের কারণে। কিন্তু শুধু বোলার হিসেবে জহির খানেই যে সেরা, সেটা একবাক্যে স্বীকার করে নেন সবাই। দীর্ঘ ২৮ বছর বিশ্বকাপ খরা কাটিয়ে ২০১১ সালে ভারত যে বিশ্বকাপ জিতেছে, তার পেছনে অনবদ্য কৃতিত্ব ছিল জহির খানেরও। ২১ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সেরা বোলার হয়েছিলেন তিনি। অথচ এমন বোলারকেই কি না বিশ্বকাপের পর ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল ভারত। ফর্মহীনতার অজুহাতে একের পর এক উপেক্ষার শিকার হতে থাকেন তিনি।
এমনকি রঞ্জি ট্রফি এবং আইপিএলে চমৎকার বোলিং করা সত্ত্বেও ধোনির চক্ষুশূল হতে থাকেন জহির। যে কারণে শেষ পর্যন্ত ২০১৫ বিশ্বকাপের দলেও ঠাঁই মেলেনি ভারতের ইতি সেরা পেসারের। উপেক্ষিত হতে থাকলেও জহির অপেক্ষায় ছিলেন, যদি আবার ডাক আসে তার!
কিন্তু, বয়সকে তো আর বেধে রাখা যায় না। ৩৭টি বসন্ত ইতিমধ্যে পার হয়ে গেছে। সুতরাং, আর অপেক্ষা নয়, বিদায় বলে দেয়ার সময়টা এসেই গেল। এবং জহির খানও অপেক্ষা করতে রাজি নন আর। আন্তর্জাতিক এবং প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শুধুমাত্র আইপিএলই খেলবেন তিনি। তাও মাত্র আর একটি মৌসুম। এরপর চিরতরেই বল তুলে রাখবেন শো-কেসে।
ভারতের ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন জহির খান। সেই আসরে শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে যৌথভাবে উপমহাদেশের সর্বোচ্চ ২১ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারে ৯২ টেস্ট থেকে ৩১১ ও ২০০ ওয়ানডে থেকে ২৮২ উইকেট ঝুলিতে ভরেছেন তিনি।
জহির খান আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০০০ সালে। আর সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন গত বছর ফেব্রুয়ারিতে। ওয়েলিংটনের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচই ছিল তার জহির খানের ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আর শেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১২ সালের আগস্টে; পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। একই বছর অক্টোবরে কলম্বোতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপে খেলেছেন সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টোয়েন্টি২০ ম্যাচ।
তবে ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার অবসরের কারণ হিসেবে নিজের ফিটনেসের ঘাটতির কথা। জহির খান বলেছেন, ‘আমি আসন্ন মৌসুমে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু আমার কাঁধের যা অবস্থা তাতে দিনে ১৮ ওভারের বেশি বোলিং করা সম্ভব নয়, যা আমার ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলেছে। তাই আমি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এখানেই ইতি টানছি। আর ঘরোয়া পর্যায়ে খেলাও শেষ করব আসন্ন মৌসুমে আইপিএলের নবম আসরে খেলার মাধ্যমে।’
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন