ইতিহাস গড়েই অবসর

ক্যারিয়ারে এর চেয়ে আর সুখের সময় সম্ভবত হতে পারে না। ছিলেন ২৬তম বাছাই। প্রথম রাউন্ড থেকে বড় জোর দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্তই দৌড় থাকার কথা তার। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ফ্লাবিয়া পানেত্তার হাতে এখন শোভা পাচ্ছে গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা। ৩৩ বছর বয়সে এসে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জয়ের পর খিদেটা তাই আর থাকার কথা নয় তার। নেইও। এ কারণেই ক্যারিয়ারে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন ইতালিয়ান এই টেনিস তারকা।
ফ্ল্যাশিং মিডোর আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ছিল অল ইতালিয়ান ফাইনাল। স্বদেশী রবার্তা ভিঞ্চির মুখোমুখি হয়েছিলেন পানেত্তা। এই ভিঞ্চিই সেমিফাইনালে ভেঙে দিয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামের ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন। শেষ পর্যন্ত ভিঞ্চিকে ৭-৬, ৬-২ সেটে হারিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতে গেলেন পানেত্তা।
ইউএস ওপেন জয়ের পর সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই অবসরের ঘোষণা দেন ইতালিয়ান এই টেনিস তারকা। তিনি বলেন, ‘টেনিসকে গুডবাই বলার জন্য এর চেয়ে সম্ভবত আর ভালো কোন সময় আমার জীবনে আসবে না। সত্যিই এই মুহূর্তে আমার চেয়ে সুখি আর আর কেউ আছে কি না সন্দেহ। টুর্নামেন্টের আগে আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে এমন একটি শিরোপা জিততে পারবো। কিন্তু এখন সেই স্বপ্ন পুরোপুরিই বাস্তব।’
৩৩ বছর বয়সী পানেত্তা আবার একটি রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন। ৩৩ বছর বয়সী ইতালিয়ান এই মহিলা তারকাই হয়ে গেলেন গ্র্যান্ড স্লাম ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে মেজর টাইটেল জয়ী খেলোয়াড়। একই সঙ্গে গ্র্যান্ড স্লামের ইতিহাসে এতবড় অপ্রত্যাশিত ফাইনালও এর আগে দেখা যায়নি। যেখানে মুখোমুখি হয়েছেন র্যাংকিংয়ের ২৬তম বাছাই ফ্লাভিয়া পানেত্তা আর সম্পূর্ণ অবাছাই রবার্তা ভিঞ্চি। এই জয়ের পর চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ফ্লাভিয়া পানেত্তা পেলেন ৩.৩ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা)। রানারআপ রবার্তা ভিঞ্চি পেলেন ১.৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা)।
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে প্রায় ২৪ হাজার দর্শকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইতালিয়ান প্রেসিডেন্ট মাতেও রেনজি। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে গেছেন তিনি। প্রথমবারেরমত অল ইতালিয়ান ফাইনাল দেখা থেকে বঞ্চিত থাকতে চাইলেন না বলেই তিনি উপস্থিত হয়ে গিয়েছিলেন ফ্ল্যাশিং মিডোয়।
টেনিসে একটা সময় ছিল পানেত্তা আর ভিঞ্চি মিলে জুটি বেধে খেলতেন ডাবলস। সেখানে সাফল্য ছিল তাদের হাতে গোনা। জুটির সেই দু’জনই স্বপ্নের মত মুখোমুখি হয়ে গেলেন ইউএস ওপেনের ফাইনালে। আর যেটাকে সবাই ‘সেরেনা স্লাম’ বলে অভিহিত করছিল, সেটাই যেন কেড়ে নিলেন ইতালিয়ান এই দু’জন।
এই মুহূর্তে এখানে কোনো মন্তব্য নেই, আপনি কি একটি মন্তব্য দেবেন?
মন্তব্য লিখুন